টানা দুবার সাফ চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ নারী ফুটবল দলের তারকা খেলোয়াড় ঋতুপর্ণা চাকমা বরাদ্দকৃত জমিতে বাড়ি নির্মাণ করতে গিয়ে বাধার সম্মুখীন হয়েছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া এক স্ট্যাটাসে তিনি এ নিয়ে ক্ষোভ ও হতাশা প্রকাশ করেছেন।
২০২২ সালে আশ্বাস, ২০২৪ সালে প্রতিশ্রুতি—তবুও বাস্তবায়ন হয়নি!
২০২২ সালে প্রথমবার সাফ জয়ের পর রাঙামাটি জেলা প্রশাসন পাঁচজন খেলোয়াড়কে সংবর্ধনা দেয়। সে সময় জেলা প্রশাসক তার গ্রামের বাড়ির জরাজীর্ণ অবস্থা দেখে বাড়ি ও রাস্তা নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দেন। তবে শুধুমাত্র আরেক ফুটবলার রূপনা চাকমার জন্যই সেই প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন করা হয়।
২০২৪ সালে বাংলাদেশ আবারও সাফ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর, প্রশাসনের পক্ষ থেকে আবারও আশ্বাস দেওয়া হয়। তাকে ঘাগড়া বাজারের পাশে সরকারি খাস জমি বরাদ্দ দেওয়া হয়, যেখানে তার জন্য বাড়ি নির্মাণের পরিকল্পনা নেওয়া হয়।
বাধার অভিযোগ, অর্থ দাবির ইঙ্গিত!
গত শুক্রবার ঋতুপর্ণাকে জানানো হয় যে, বরাদ্দকৃত জায়গাটি ৭০ জনের একটি কমিটির দখলে। তারা দাবি করে, জায়গাটি ৩.৫ লাখ টাকায় কিনে নিয়েছে এবং ঋতুপর্ণাকে ৭ লাখ টাকা দিতে হবে, নতুবা ঘর নির্মাণ করতে দেওয়া হবে না।
ঋতুপর্ণা বিষয়টি তাৎক্ষণিকভাবে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসককে (এডিসি) জানান।
প্রশাসনের প্রতিক্রিয়া
কাউখালী উপজেলার ইউএনও কাজী আতিকুর রহমান বলেন—“বিষয়টি খুবই দুঃখজনক। আমরা ইতোমধ্যে খোঁজ নিচ্ছি। খাস জমির কোনো ব্যক্তিগত মালিকানা হয় না। যদি কেউ আপত্তি করে, তাহলে প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করুক।”
রাঙামাটির অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (এডিসি) মোহাম্মদ রুহুল আমীন আশ্বস্ত করে বলেন—“আমরা সরকারি জায়গা সরকারি টাকায় বরাদ্দ দিয়েছি, সেখানে ঋতুপর্ণার জন্য ঘর নির্মাণ করা হবে। অন্য কারও কিছু করার সুযোগ নেই।”
প্রশ্ন রয়ে গেল—কে বা কারা বাধা দিচ্ছে?
প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিষয়টি তদন্তের আশ্বাস দেওয়া হলেও এখনো পরিষ্কার নয় কারা এই বাধা সৃষ্টি করছে। প্রশাসন ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বললেও কবে নাগাদ সমস্যার সমাধান হবে, সেটি অনিশ্চিত।
এমন এক প্রতিভাবান ফুটবলারের নিজের দেশে বাড়ি পেতে এত প্রতিবন্ধকতার মুখে পড়তে হবে—এটাই দুঃখজনক!