চ্যাম্পিয়ন্স লিগের কোয়ার্টার ফাইনালের প্রথম লেগে আর্সেনালের মাঠ এমিরেটসে রীতিমতো বিধ্বস্তই হলো ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়ন রিয়াল মাদ্রিদ। প্রথমার্ধে দুই দলের মধ্যেই ছিল টানটান লড়াই। একাধিক সুযোগ তৈরি হলেও গোলের দেখা মেলেনি। কিন্তু বিরতির পর যেন ভিন্ন এক চিত্র—মাঠজুড়ে শুধু আর্সেনাল, আর আলোয় ডেকলান রাইস। দুর্দান্ত দুটি ফ্রি কিক থেকে গোল করে দলের জন্য ভিত্তি গড়ে দেন ইংলিশ এই মিডফিল্ডার। সেই সুবাদেই ৩-০ গোলে বড় জয় তুলে নেয় আর্সেনাল।
খেলার শুরুতে কিছুটা রক্ষণাত্মক থাকলেও সময় গড়ানোর সঙ্গে আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠে আর্সেনাল। প্রথমার্ধে আর্সেনালের খেলোয়াড়রা একের পর এক আক্রমণ শানালেও রিয়াল গোলরক্ষক থিবো কোর্তোয়া দাঁড়িয়ে ছিলেন একাই দেয়ালের মতো। দারুণ কয়েকটি সেভে দলকে প্রথমার্ধে রক্ষা করলেও দ্বিতীয়ার্ধে আর কিছুই করার ছিল না তার।
বিরতির পর হঠাৎ করেই গতি পাল্টায় ম্যাচের। ৫৮তম মিনিটে প্রথমবার ফ্রি কিক থেকে গোল করেন রাইস, আর ৭০ মিনিটে আরও একটি। দুই ফ্রি কিকেই ছিল নিখুঁত লক্ষ্যভেদ আর দুর্দান্ত নিয়ন্ত্রণ। দুইবারই বল পোস্ট ঘেঁষে ঢুকে পড়ে জালে, কোর্তোয়া ছিলেন হতবিহ্বল। দু’টি ফাউলই আদায় করে নেন বুকায়ো সাকা, যার বুদ্ধিদীপ্ত গতিময়তায় ব্যাকফুটে চলে যায় রিয়াল রক্ষণভাগ।
রাইসের ঝলক যখন এখনও ধাক্কা সামলাতে পারেনি মাদ্রিদ, তখনই আসে তৃতীয় আঘাত। ম্যাচের ৭৫তম মিনিটে মেরিনো যে গোলে ব্যবধান বাড়ান, তাতে একরকম স্তব্ধ হয়ে পড়ে আনচেলত্তির দল। এরপর অবশ্য আর কোনো বড় সুযোগ তৈরি হয়নি, আর হয়নি গোল।
দ্বিতীয়ার্ধে ম্যাচ পুরোপুরি নিজের করে নেয় আর্সেনাল। রিয়াল মাদ্রিদের রক্ষণ যেন খেই হারিয়ে ফেলেছিল, মাঝমাঠেও তারা হোঁচট খেয়েছে একের পর এক। আগামী ১৬ এপ্রিল বার্নাব্যুতে ফিরতি লেগে কীভাবে এই ব্যবধান মেটাবে রিয়াল, সেটাই এখন বড় প্রশ্ন। বর্তমান চ্যাম্পিয়নদের সামনে দাঁড়িয়ে কঠিন চ্যালেঞ্জ।
অবশ্য কার্লো আনচেলত্তি বরং পুরো সিরিজটাই দেখছেন দুই ধাপের যুদ্ধ হিসেবে। তাঁর ভাষায়, “এমিরেটসে ম্যাচটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ, তবে এটিই সব নয়। সামনে আরও ৯০ মিনিট অপেক্ষা করছে বার্নাব্যুতে। সবকিছু মিলিয়ে আমরা এখনো সব শিরোপার দৌড়ে আছি। যদি না পারি, তখন ভাববো পরের মৌসুম নিয়ে। তবে এখনই সেই সময় আসেনি।”