ময়মনসিংহ জেলা স্টেডিয়ামে যেখান থেকে খেলা স্থগিত হয়েছিল, সেখান থেকেই আবার শুরু হলো ফেডারেশন কাপের ফাইনাল। দশ জন নিয়ে মাঠে নামা বসুন্ধরা কিংস আর ১১ জনের আবাহনীর মধ্যে বাকি ১৫ মিনিটে কোনো গোল না হওয়ায় ম্যাচ গড়ায় টাইব্রেকারে। আর সেখানেই গোলকিপার মেহেদী হাসান শ্রাবণের দুর্দান্ত নৈপুণ্যে চ্যাম্পিয়নের মুকুট ধরে রাখল বসুন্ধরা কিংস।
টাইব্রেকারে ৫-৩ গোলে জয় পায় কিংস। এর ঠিক এক সপ্তাহ আগে দুই দলের মধ্যে নির্ধারিত ৯০ মিনিট ও অতিরিক্ত সময়ের প্রথমার্ধ শেষে স্কোরলাইন ছিল ১-১।
টাইব্রেকারে কিংসের পাঁচজন খেলোয়াড়—জোনাথন, মোরসালিন, তপু, ইনসান ও দেসিয়েল—সবাই স্পটকিকে গোল করতে সক্ষম হন। আবাহনীর পক্ষে রাফায়েল, সবুজ এবং মিরাজুল গোল করলেও এমেকা ওগবাহ ব্যর্থ হন। তার নেওয়া শট ঠেকিয়ে মার্তিনেস-স্টাইলে কাঁধ নাচিয়ে উদযাপন করেন শ্রাবণ। মিরাজুলের শটও প্রথমবার ঠেকিয়ে দিয়েছিলেন, কিন্তু পোস্ট আগেভাগে ছেড়ে আসায় রেফারি পুনরায় শট নেওয়ার নির্দেশ দেন। দ্বিতীয়বারে গোল পেলেও শেষ রক্ষা হয়নি আবাহনীর।
ফাইনালের আগে মাঠের বাইরের নানা ঘটনা আর আলোচনায় তোলপাড় ছিল সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। আলোস্বল্পতায় স্থগিত হওয়া ম্যাচে এইবার আর ‘টেবিল ট্রফি’ নয়—ট্রফি রাখা হয়েছিল সাজানো পোডিয়ামে। তবে গ্যালারিতে আগের মতো দর্শক দেখা যায়নি।
ম্যাচে মোট ১১টি হলুদ কার্ড আর একটি লাল কার্ড দেখানো হয়, যা ফাইনালকে করে তোলে উত্তেজনায় ঠাসা। আবাহনীর সুমন ম্যাচের শুরুতেই হলুদ কার্ড দেখেন, আর শেষ দিকে কিংসের রাকিব হলুদ দেখেন মিরাজুলকে কনুই মারার ঘটনায়। ম্যাচের শেষদিকে টাইব্রেকারের কথা মাথায় রেখে কিংস কোচ কয়েকটি কৌশলগত পরিবর্তন আনেন।
শেষ মুহূর্তে আবাহনীর রাফায়েলের ফ্রি কিক গোলবারে প্রতিহত হলে খেলা গড়ায় টাইব্রেকারে। আর সেখানেই শ্রাবণের হাত ধরে আবাহনীকে মধুর প্রতিশোধ দেয় কিংস। কারণ, এই প্রতিযোগিতার প্রথম কোয়ালিফায়ারে টাইব্রেকারে হেরেই শুরু করেছিল কিংস।
এই হারে ১২ বারের রেকর্ড চ্যাম্পিয়ন আবাহনীর ট্রফি ফেরানোর অপেক্ষা আরও দীর্ঘ হলো। আর বসুন্ধরা কিংস পেল টানা দ্বিতীয় ও ইতিহাসের চতুর্থ ফেডারেশন কাপ জয়ের স্বাদ।